বেলাল চৌধুরীঃ
মানিকগঞ্জ জেলা সদর ও আরিচা মহাসড়ক সড়কপথজুড়ে চলছে ভয়াবহ চাঁদাবাজির মহোৎসব। চাঁদাবাজির নেতৃত্বে রয়েছেন মো. হাফিজ ও সাইফুল নামের দুই ব্যক্তি। তাদের ছত্রছায়ায় প্রতিদিন শত শত গাড়ি থেকে অবাধে টাকা আদায় করা হচ্ছে, অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, পাটুরিয়া ঘাট থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত চলাচলকারী প্রায় প্রতিটি যানবাহন থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করা হয়। মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের পেছনে কাজ করছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের একটি চক্র।
পরিবহন মালিকদের সঙ্গে কথা বললে জানা যায়, সড়কে চলাচলকারী প্রতিটি গাড়ি থেকে 'জিপি' নামক অজানা খাতে ২০ টাকা করে আদায় করে একদল লোক, যারা নিজেদের 'নেতা' পরিচয়ে পরিচিত করে। তারা বলেন, "আমরা ক্ষতির মধ্যে পড়ছি, অথচ প্রতিবাদ করার সুযোগ নেই। প্রতিবাদ করলে হুমকি আসে গাড়ি রুটে চলতে দেওয়া হবে না।"
প্রতিদিন গড়ে এক হাজার গাড়ি চলাচল করে এই রুটে। প্রতিটি গাড়ি থেকে ২০ টাকা করে আদায় করলে প্রতিদিন আদায় হয় প্রায় ২০ হাজার টাকা। পাশাপাশি বাসস্ট্যান্ড ও আশপাশের দোকানগুলো থেকেও চাঁদা আদায় করে হাফিজ ও সাইফুলের নেতৃত্বাধীন চক্র। সব মিলিয়ে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকার অবৈধ লেনদেন হয়ে থাকে।
যা বাস্তবে একটি চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের ঢাল। এ চক্রের অন্যতম সহযোগী মাসুদ নামের একজন ব্যক্তি, যিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে এবং হুমকি দিয়ে বলেন, “এখানে মাথা ঘামানোর দরকার নেই। বেশি ঘাঁটলে অবস্থা খারাপ করে দেব।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সারাক্ষণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি থাকলেও তারা এসব চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। এ প্রশ্ন ঘুরে ফিরে আসছে তারা কি অদৃশ্য চাপে নীরব, নাকি স্বার্থ সংশ্লিষ্টতায় জড়িত?
ভুক্তভোগী পরিবহন মালিক-চালকরা বলেন, "চাঁদা না দিলে গালিগালাজ, হুমকি, এমনকি গাড়ি চলাচলে বাধা দেওয়া হয়। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, হাফিজ ও সাইফুলকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক। তাহলে অন্তত মানিকগঞ্জবাসী একটি চাঁদামুক্ত বাসস্ট্যান্ড দেখতে পাবে।"
দ্রুত তদন্ত করে সাইফুল, হাফিজ ও মাসুদ গংয়ের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। জনগণের জানমাল ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে চাঁদাবাজদের রুখে দিতে হবে এখনই।
0 coment rios: