Thursday, May 1, 2025

আজ মহান মে দিবস

 


মোঃসুমন মিয়া (আশুলিয়া) থেকেঃ

মহান মে দিবস আজ বৃহস্পতিবার। দিনটিকে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসও বলা হয়।

বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের ঐতিহাসিক দিন আজ। ১৮৮৬ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ওইদিন তাদের জীবনদানের মধ্যদিয়ে শ্রমিক শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। শ্রমিকদের দৈনিক কাজের সময় নেমে আসে ৮ ঘণ্টায়। অধিকার আদায়ের জন্য শ্রমিকদের আত্মত্যাগের এ দিনকে তখন থেকেই সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ মহান মে দিবসের পাশাপাশি এ বছর একই দিনে ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস’ পালন করা হচ্ছে।

মে দিবসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে জাতীয় ছুটির দিন। এ উপলক্ষে অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন। দিনটি পালনে রাষ্ট্রীয়ভাবে একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, শ্রমিক সমাবেশ, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, সেমিনার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি। মহান মে দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় পত্রিকাগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো দিনটি উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান ও টকশো সম্প্রচার করবে।

সম্প্রতি শ্রম মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে মহান মে দিবসে সব কারখানা/প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, কোনো কারখানা কর্তৃপক্ষ মে দিবসে কারখানা খোলা রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

আদেশে বলা হয়, যৌক্তিক কারণ এবং শ্রম আইনের প্রতিপালন ছাড়া কোনো শ্রমিককে চাকরিচ্যুত/ছাঁটাই করা যাবে না। শ্রমিককে চাকরিচ্যুত/ছাঁটাই করার আগে সংশ্লিষ্টদের ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে। শ্রম আইন মেনে শ্রমিককে চাকরিচ্যুত/ছাঁটাই করা না হলে মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস উপলক্ষে বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘শ্রমিকদের রক্তাক্ত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শ্রমিক ও শ্রমের মর্যাদা সম্মানের সঙ্গে বিশ্বময় স্বীকৃতি লাভ করেছে। এটি শুধু একটি সাধারণ দিবস নয়, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামের অনুপ্রেরণার উৎস।’

প্রধান উপদেষ্টা বাণীতে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার ঐতিহাসিক এ দিনে যাদের আত্মত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে শ্রমিক অধিকার স্বীকৃতি পেয়েছে তাদেরসহ দেশের সব মেহনতি মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানান।

শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্কের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে মে দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শ্রমিক ও মালিক পরস্পরের পরিপূরক, আর তাদের যৌথ প্রচেষ্টাই একটি শক্তিশালী, আত্মনির্ভরশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। এ দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে হলে ঐক্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং আস্থার পরিবেশ সুদৃঢ় করতে হবে। আমরা যদি ঐক্য ও সহযোগিতার ধারা অব্যাহত রাখি, তাহলে জুলাই-আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন শুধু স্বপ্ন নয়, বাস্তব হয়ে উঠবে।’

বাণীতে ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস’ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শ্রমিকের ন্যায্য স্বীকৃতি ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা শুধু শ্রমিকদের অধিকারই নয়, এটি শিল্প ও অর্থনীতির উন্নয়নের অন্যতম শর্ত।বাংলাদেশের উন্নয়ন-যাত্রায় শ্রমিক ও মালিকের অংশীদারত্বে দেশের অগ্রগতি আরও ত্বরান্বিত হবে বলে প্রধান উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।মে দিবস উপলক্ষে টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন সমাবেশ ও র‍্যালীর আয়োজন করেন উক্ত আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি: বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসাইন। প্রধান বক্তা: শ্রমিকনেতা তপন সাহা বক্তাঃ সেলিম হোসেন, নাজমা বেগম, আলামিন সরকার, জান্নাতুল ফেরদৌস আঁখি, জহিরুল ইসলাম, রোজিনা বেগম, বাচ্চু মিয়া, আব্দুল বাতেন, মিরাজুল ইসলাম, মোঃ শাহাদাত হোসেন, জায়রিন প্রমুখ।সভাপতিত্ব করবেন: শ্রমিকনেতা মিজানুর রহমান


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: