প্রতিবেদনে বেলাল চৌধুরী:
মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার অবহেলিত চরাঞ্চলের মানুষ পড়েছে চরম বিপদের মুখে। ইজারা নেওয়া জায়গা বাদ দিয়ে অন্য চর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তলোন করছে একটি প্রভাবশালী মহল। এতে করে চরের জমিগুলো ধীরে ধীরে ধসে পড়ছে , ঘরবাড়ি হারানোর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন অসহায় চর আঞ্চলের মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দৌলতপুর উপজেলার রাহাতপুর বালুমহলটি ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকায় ইজারা নিয়েছে মেসার্স প্রিন্স কনস্ট্রাকশন,
যার মালিক মো. মোস্তাফিজুর রহমান। অথচ ইজারার নির্ধারিত স্থান
বাদ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি দিনের পর দিন অবৈধভাবে বালু তুলছে বাগুটিয়া ও ফকিরপাড়া চরের
বিভিন্ন এলাকা থেকে। চরবাসীরা অভিযোগ করেন, সে জেলা
ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়ে এবং
তার সহযোগী মোঃ হারুন (তেওতা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক) এরা দলের
পরিচয় দিয়ে অবৈধ বালু উত্তলোন করে যাচ্ছে নদী থেকে । এই অবৈধ বালু উত্তোলন চলে নিরবচ্ছিন্নভাবে। কাটার মেশিনের শব্দে
কেঁপে উঠে চারপাশ। নদীর পাড়ে ভাঙ্গন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়
লোকজন।
এ বিষয়ে বাগুটিয়া ইউনিয়নের নায়েব বলেন, "প্রিন্স কনস্ট্রাকশন রাহাতপুর
বালুমহাল ইজারা নিয়েছে। অন্য চরে বালু তোলা সম্পূর্ণ অবৈধ। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।"
স্থানীয় লোকজন তাদেরকে বাগুটিয়া নদী থেকে বালু উত্তলোন
না করার জন্য নিষেধ করলে দু-একদিন বন্ধ রাখেন। পরবতীতে আবার গত ১১ জুলাই (শুক্রবার)
আবার ও বাগুটিয়া থেকে বালু উত্তলোন করেছেন। এভাবেই দলের প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ বালু উত্তলোন
করে যাচ্ছে।
এই বিয়য়ে জানার জন্য গত ১২ জুলাই (শনিবার) দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সথে সাংবাদিকরা
মুঠোফনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার সাথে
যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।
তবে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. মো. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন,"বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।"
চরের মানুষের দাবি, অবিলম্বে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। নয়তো চরের
অস্তিত্ব, মানুষের বসতভিটা, ফসলের
মাঠ সবকিছু হারিয়ে যাবে। চর আঞ্চল মানুষের দাবি, প্রশাসনের কঠোর নজরদারি, সুষ্ঠু বালুমহল
ব্যবস্থাপনা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হোক।
চরবাসী আরো দাবি জানান, এই বিষয়টি যেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
হস্তক্ষেপ দাবী জানান।
এখন সময়, চরবাসীর পাশে দাঁড়ানোর। তাদের চোখের পানি যেন আর নদীর
পানিতে মিশে না যায়। বালু খেকোদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হবে এটাই সময়ের দাবি।
0 coment rios: